আরে আমার প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আপনাদের প্রিয় এই বন্ধুটি আজ আবার হাজির নতুন এক দারুণ খবর নিয়ে! ভাবতেই পারছেন না কোথায় নিয়ে যাচ্ছি আপনাদের?
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন – এবার ইতালির বুকে কোরিয়ান খাবারের এক ঝলক! আমি তো নিজেই যখন প্রথম ইতালিতে এসে একটি সত্যিকারের কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট খুঁজে পেয়েছিলাম, সে কি উত্তেজনা আর আনন্দ!
মনে হচ্ছিল যেন বহু দূর দেশে নিজের বাড়ির এক টুকরো স্বাদ পেয়ে গেছি। শুধু কি রেস্টুরেন্ট? না না, এখন তো ইতালির বিভিন্ন শহরে একের পর এক দুর্দান্ত কোরিয়ান সুপারমার্কেটও মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, যেখানে আমাদের পছন্দের সব কিমচি, রামেন আর কোরিয়ান সস হাতের কাছেই!
সাম্প্রতিককালে K-pop আর K-drama-র জনপ্রিয়তা যেভাবে বিশ্বজুড়ে ঝড় তুলেছে, তার প্রভাব ইতালিতেও বেশ চোখে পড়ার মতো। তাই স্বাভাবিকভাবেই কোরিয়ান সংস্কৃতি আর তার অনবদ্য খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহ এখন আকাশছোঁয়া। আমার মনে হয়, আগামীতে ইতালিতে কোরিয়ান ফুড কালচারের এই আকর্ষণ আরও অনেক বাড়বে, এবং নতুন নতুন ফিউশন ও রেসিপি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে, ইতালির এই কোরিয়ান স্বাদের জগতে প্রবেশ করি আর নিশ্চিতভাবে জেনে নিই সেরা ঠিকানাগুলো!
ইতালির বুকে কোরিয়ান স্বাদের নতুন দিগন্ত

ইতালির মতো একটা দেশে, যেখানে খাবারের নিজস্ব ঐতিহ্য বিশ্বজুড়ে সমাদৃত, সেখানে কোরিয়ান খাবারের এমন জনপ্রিয়তা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। আমার মনে আছে, কয়েক বছর আগেও যখন কোরিয়ান খাবার নিয়ে কেউ কথা বলতো, তখন অনেকে ভুরু কুঁচকে তাকাতো। কিন্তু আজকাল চিত্রটা একেবারে ভিন্ন!
আমি দেখেছি, মিলান, রোম কিংবা ফ্লোরেন্সের মতো বড় শহরগুলোতে এখন কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট আর সুপারমার্কেটগুলো উপচে পড়া ভিড় সামলাতে ব্যস্ত। K-pop আর K-drama-র ঢেউ যে শুধু গান আর নাটক নিয়ে আসেনি, তা কোরিয়ান খাবারের এই উত্থান দেখলেই বোঝা যায়। তরুণ প্রজন্ম তো বটেই, এমনকি ইতালির প্রবীণরাও এখন কিমচি আর বিবিমবাপের প্রেমে পড়ছেন। আমি নিজেও অনেক ইতালীয় বন্ধুকে দেখেছি, যারা প্রথম দিকে একটু দ্বিধা করলেও, একবার কোরিয়ান বারবিকিউ বা জাজংমিয়ন চেখে দেখার পর রীতিমতো ফ্যান হয়ে গেছে। এটা আসলে একটা সংস্কৃতির আদান-প্রদান, যেখানে ইতালির মানুষ কোরিয়ানদের জীবনযাত্রা আর খাবারদাবার নিয়ে আরও বেশি আগ্রহী হচ্ছে। এই প্রবণতা আগামীতে আরও বাড়বে বলেই আমার বিশ্বাস, আর তখন ইতালির প্রতিটি শহরেই আমরা কোরিয়ান স্বাদের একটা না একটা ঠেক খুঁজে পাবো। সত্যি বলতে কি, খাবারের মাধ্যমে নতুন সংস্কৃতিকে জানার এই অভিজ্ঞতাটা অসাধারণ!
কোরিয়ান খাবারের জাদুকরী প্রভাব
সত্যি কথা বলতে কি, আমি নিজেই কোরিয়ান খাবারের এই জাদুকরী প্রভাবে মুগ্ধ! শুধু ইতালিতেই নয়, বিশ্বজুড়েই কোরিয়ান খাবার এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এর পেছনে K-pop এবং K-drama-র অবদান অনস্বীকার্য [cite: ৫]। ইতালির রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে যখন দেখি তরুণ-তরুণীরা K-pop গানের তালে মেতে উঠছে, তখন বুঝতে পারি কীভাবে এই সংস্কৃতি তাদের খাবারের রুচিকেও প্রভাবিত করছে। আমার তো মনে হয়, নতুন নতুন কোরিয়ান রেস্টুরেন্টগুলো শুধুমাত্র কোরিয়ানদের টার্গেট করে নয়, বরং ইতালীয়দের মধ্যেও এই খাবারের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেককে চিনি যারা K-drama দেখতে দেখতে কোরিয়ান রামেন বা বিরিয়ানি খেতে চাইছে। এই খাবারগুলোর স্বাদ, মশলাদার চরিত্র আর স্বাস্থ্যকর দিকগুলো ইতালীয়দের কাছে নতুন এবং আকর্ষণীয় মনে হচ্ছে। এককথায়, কোরিয়ান খাবারের এই জনপ্রিয়তা নিছকই একটি প্রবণতা নয়, এটি একটি সংস্কৃতি বিপ্লব!
[cite: ৫]
ইতালীয়দের খাদ্যতালিকায় নতুন সংযোজন
আমার অভিজ্ঞতা বলছে, ইতালীয়দের ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতি অটল ভালোবাসা থাকলেও, তারা নতুন কিছু চেখে দেখতে সবসময়ই প্রস্তুত থাকে। আর সেই সুযোগটাই করে দিচ্ছে কোরিয়ান খাবার। আমি দেখেছি, কিভাবে ইতালীয় শেফরাও এখন কোরিয়ান উপাদানের সাথে ইতালীয় রান্নার ফিউশন তৈরি করছেন। ব্যাপারটা এমন, যেন পাস্তা আর কিমচির একটা দারুণ মিলন ঘটছে!
কোরিয়ান সস, যেমন গোচুজাং বা ডেনজাং, এখন অনেক ইতালীয় রান্নাঘরের তাককেও আলোকিত করছে। আমি নিজেই কয়েকবার কিছু ফিউশন ডিশ তৈরি করে আমার ইতালীয় বন্ধুদের খাইয়েছি আর তারা তো রীতিমতো অবাক!
তাদের কাছে এটা ছিল সম্পূর্ণ নতুন একটা অভিজ্ঞতা, যেখানে পরিচিত স্বাদের সাথে একটা অচেনা কিন্তু চমৎকার মশলাদার স্পর্শ মিশে গেছে। এই নতুন সংযোজন ইতালীয়দের খাদ্যতালিকাকে আরও সমৃদ্ধ করছে, যা দেখে আমার মন ভরে যায়।
সেরা কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট: ঐতিহ্যের স্বাদ যেখানে জীবন্ত
ইতালির বিভিন্ন শহরে এখন যে কোরিয়ান রেস্টুরেন্টগুলো মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, তাদের মধ্যে কিছু রেস্টুরেন্ট সত্যিই অতুলনীয়। মিলানের ‘জিনমি’ বা ‘মুন রেস্টুরেন্ট কোরিয়ানো’র (Ginmi, Moon Ristorante Coreano) মতো জায়গাগুলো শুধুমাত্র খাবারের জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং সেখানকার পরিবেশ আর আতিথেয়তাও মনে রাখার মতো [cite: ২]। আমি নিজে যখন প্রথম এই রেস্টুরেন্টগুলোতে গিয়েছিলাম, মনে হয়েছিল যেন এক টুকরো কোরিয়া ইতালির বুকে এসে বসেছে। সিওলের কোনো একটা গলি থেকে উঠে আসা রেস্টুরেন্টের মতোই সেখানে বুন্দাইচি বা বিবিমবাপের (Bibimbap) আসল স্বাদ পাওয়া যায়। এখানকার শেফরা শুধুমাত্র খাঁটি কোরিয়ান রেসিপিগুলোই পরিবেশন করেন না, বরং প্রতিটি ডিশে তাদের নিজস্ব ভালোবাসা আর কারিগরী দক্ষতার ছাপ রাখেন। আমার তো মনে হয়, ইতালিতে বসে যারা কোরিয়ার আসল স্বাদ পেতে চান, তাদের জন্য এই রেস্টুরেন্টগুলো এক নম্বর ঠিকানা। এখানকার গ্রিলড মাংসের সুগন্ধ আর কিমচির টক-ঝাল স্বাদ যে কোনো ভোজনরসিকের মন জয় করে নেবে।
মিলানের কোরিয়ান রন্ধনশিল্পের ঠিকানা
মিলানকে ইতালির ফ্যাশন ক্যাপিটাল বলা হলেও, আমার কাছে এটা এখন কোরিয়ান খাবারেরও এক দারুণ হাব (hub) হয়ে উঠেছে! ‘মাই কিমচি’ (My Kimchi) নামের একটা রেস্টুরেন্ট আছে মিলানে, যেখানে আমি একবার সামগিয়েওপসাল (Samgyupsal) আর বিবিমবাপ (Bibimbap) খেয়ে রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম [cite: ৩]। এখানকার সামগিয়েওপসালের মাংস এত নরম আর রসালো যে মুখে দিলেই মিলিয়ে যায়!
আর বিবিমবাপের প্রতিটি উপাদানের স্বাদ এমনভাবে মিশে যায়, যা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দেয়। এছাড়াও, ‘ইজিও রেস্টুরেন্ট কোরিয়ানো’ (IGIO Ristorante Coreano) বা ‘পোললো কোরিয়ান চিকেন অ্যান্ড হট ডগস’ (Pollolo Korean Chicken & Hot Dogs)-এর মতো জায়গাগুলোও মিলানের কোরিয়ান ফুড ফ্যানদের কাছে বেশ জনপ্রিয় [cite: ২]। বিশেষ করে, পোললোর কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেনটা তো আমার অলটাইম ফেভারিট!
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে ঝাল ঝাল চিকেন আর সাথে কোরিয়ান বিয়ার – উফফ, এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? [cite: ২]
রোম এবং অন্যান্য শহরের লুকানো রত্ন
শুধুই কি মিলান? না না, রোমের মতো প্রাচীন শহরেও কোরিয়ান খাবারের লুকানো রত্ন খুঁজে পাওয়া যায়। ‘সোনামু কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট’ (Sonamu Korean Restaurant) রোমে বেশ পরিচিত, যেখানে আপনি আসল কোরিয়ান খাবারের স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন [cite: ২]। আমার মনে আছে, একবার রোমে ঘুরতে গিয়ে হঠাৎ করে কোরিয়ান খাবারের ক্রেভিং (craving) হয়েছিল, আর তখনই এই রেস্টুরেন্টটা খুঁজে পেয়েছিলাম। এখানকার কিমচি জিগে (Kimchi Jjigae) আর ভুলগোগি (Bulgogi) এতটাই অথেন্টিক যে মনে হবে যেন সিওলের কোনো স্থানীয় রেস্টুরেন্টে বসে খাচ্ছি। ফ্লোরেন্স বা ভেনিসের মতো শহরগুলোতেও ধীরে ধীরে ছোট ছোট কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠছে, যা পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ তৈরি করছে। এমনকি, ইতালির প্রাচীন শহর মাতেরাতেও (Matera) একজন কোরিয়ান রেস্টুরেন্টের মালিক তার স্বদেশী খাবারের প্রতি ভালোবাসা থেকে একটি রেস্টুরেন্ট খুলেছেন, যা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য [cite: ১২]। আমার বিশ্বাস, এই লুকানো রত্নগুলো একদিন ইতালির সব কোণে ছড়িয়ে পড়বে।
কোরিয়ান সুপারমার্কেট: আপনার রান্নাঘরের কোরিয়ান ঠিকানা
আসল কোরিয়ান খাবারের স্বাদ নিতে গেলে শুধু রেস্টুরেন্টেই ভরসা রাখলে চলে না, অনেক সময় নিজের হাতে রান্না করারও একটা আলাদা আনন্দ থাকে। আর এখানেই আসে কোরিয়ান সুপারমার্কেটগুলোর গুরুত্ব। ইতালির বড় শহরগুলোতে এখন বেশ কিছু দারুণ কোরিয়ান এবং এশিয়ান সুপারমার্কেট গড়ে উঠেছে, যেখানে আমাদের পছন্দের সব কোরিয়ান উপকরণ সহজেই পাওয়া যায় [cite: ৬, ৭]। ভাবতেই পারছেন না কি দারুণ একটা ব্যাপার!
কিমচি থেকে শুরু করে রামেন, সস, মশলাপাতি – সবকিছুই হাতের নাগালে। আমার তো মনে হয়, যারা কোরিয়ান রান্নার প্রেমে পড়েছেন, তাদের জন্য এই সুপারমার্কেটগুলো স্বর্গের মতো। আমি নিজেই যখন প্রথম মিলানের একটা কোরিয়ান সুপারমার্কেটে গিয়েছিলাম, তখন তো রীতিমতো অবাক হয়ে গেছিলাম। মনে হচ্ছিল যেন কোরিয়ার কোনো এক দোকানে ঢুকে পড়েছি!
নানা ধরনের কিমচি, মশলার প্যাকেট, ইনস্ট্যান্ট রামেন – সবই এত সুন্দর করে সাজানো থাকে যে কোনটা ছেড়ে কোনটা কিনব, সেটাই ভাবতে অনেক সময় লেগে যায়। এই সুপারমার্কেটগুলো শুধু খাবার বিক্রি করে না, বরং কোরিয়ান সংস্কৃতির একটা অংশকে ইতালির মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। [cite: ৬, ৭]
মিলানের এশিয়ান বাজারের ভান্ডার
মিলানে বেশ কিছু এশিয়ান সুপারমার্কেট আছে, যেখানে কোরিয়ান পণ্যের একটা বিশাল সংগ্রহ থাকে। ‘কে-পপ গুডস শপ কোরিয়া সুপারমার্কেট’ (K-pop Goods Shop Korea Supermarket) বা ‘ইস্ট এশিয়া মার্ট’ (East Asia Mart) এর মতো জায়গাগুলো কোরিয়ান খাবারের সব ধরনের উপকরণ সরবরাহ করে [cite: ৬]। আমি দেখেছি, এখানে কিমচি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ন্যাপা বাঁধাকপি থেকে শুরু করে কোরিয়ান মুলা, সবুজ পেঁয়াজ—সব তাজা সবজিও পাওয়া যায়। এছাড়াও, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রামেন, যেমন ঝাল বুলদাক রামেন (Buldak Ramen), জিন রামেন (Jin Ramen) বা চাম্পং রামেন (Jjamppong Ramen) [cite: ৬] – সব এখানে পাবেন। আমি নিজে এখান থেকে অনেকবার ইনগ্রিডিয়েন্টস কিনে বাড়িতে কোরিয়ান ফ্রাইড রাইস বা কিমচি জিগে বানিয়েছি। সত্যি বলতে কি, নিজের হাতে পছন্দের কোরিয়ান খাবার বানানোর মজাই আলাদা, আর এই সুপারমার্কেটগুলো সেই সুযোগটাই করে দিচ্ছে।
রোমের প্রাচ্যীয় স্বাদের কেন্দ্র
রোমেও কোরিয়ান খাবারের সন্ধানে থাকা মানুষের জন্য দারুণ কিছু জায়গা আছে। ‘জিন শি’ (Xin Shi) এর মতো কিছু এশিয়ান গ্রোসারি স্টোর রোমে বেশ জনপ্রিয়, যেখানে আপনি কোরিয়ান পণ্য খুঁজে পাবেন [cite: ৭]। আমি রোমের বেশ কয়েকটি ছোট ফিলিপিনো বা চাইনিজ স্টোরও দেখেছি, যেখানে কোরিয়ান কিমচি বা রামেন পাওয়া যায় [cite: ৭]। হয়তো মিলানের মতো বিশাল সম্ভার নেই, কিন্তু আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ঠিকই পেয়ে যাবেন। আমার মনে আছে, একবার রোমে গিয়ে হঠাৎ কিমচি খুব খেতে ইচ্ছে করছিল, তখন একটা ছোট দোকানে গিয়েছিলাম। সেখানে জার করা কিমচি পেয়েছিলাম, আর সেটা এতটাই সুস্বাদু ছিল যে মনে হচ্ছিল যেন এখনি তৈরি করা হয়েছে!
[cite: ৭] এসব ছোট ছোট দোকানগুলো আসলে ইতালির কোরিয়ান ফুডপ্রেমীদের জন্য এক-একটা আশার আলো।
| শহর | জনপ্রিয় কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট (উদাহরণ) | জনপ্রিয় কোরিয়ান/এশিয়ান সুপারমার্কেট (উদাহরণ) | বিশেষত্ব |
|---|---|---|---|
| মিলান | জিনমি, মুন রেস্টুরেন্ট কোরিয়ানো, মাই কিমচি | কে-পপ গুডস শপ কোরিয়া সুপারমার্কেট, ইস্ট এশিয়া মার্ট | বিভিন্ন ধরণের কোরিয়ান বারবিকিউ, সামগিয়েওপসাল, বিবিমবাপ এবং ফ্রাইড চিকেন |
| রোম | সোনামু কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট | জিন শি (এশিয়ান গ্রোসারি) | অস্থায়ী কিমচি জিগে, ভুলগোগি এবং বিভিন্ন ধরণের রামেন |
| তুরিন | বিভিন্ন ফুড ফেস্টিভ্যাল এবং স্ট্রিট ফুড ভ্যান | স্থানীয় এশিয়ান বাজার | কোরিয়ান বারবিকিউ এবং স্ট্রিট ফুড (বিশেষ ইভেন্টগুলিতে) |
নিজেই রান্না করুন: কোরিয়ান ফুড ফিউশনের জাদু
বন্ধুরা, রেস্টুরেন্টে গিয়ে কোরিয়ান খাবার খাওয়া একরকম, আর নিজে হাতে রান্না করাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা! আমি যখন প্রথম কোরিয়ান রান্না শুরু করেছিলাম, তখন ভেবেছিলাম অনেক কঠিন হবে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, কিছু সাধারণ রেসিপি এতটাই সহজ যে যে কেউ সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারে। আর এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো রামেন!
বাজারে এখন এত ধরনের ইনস্ট্যান্ট রামেন পাওয়া যায় যে কোনটা রেখে কোনটা বানাবো, সেটাই সমস্যা। কিন্তু আসল মজাটা হলো, নিজের পছন্দমতো উপকরণ যোগ করে রামেনকে একটা ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাওয়া। আমি দেখেছি, অনেকে ডিম, সসেজ, পনির, বা তাজা সবজি দিয়ে রামেনকে আরও সুস্বাদু করে তোলে। এটা আসলে এক ধরনের ফুড ফিউশন, যেখানে কোরিয়ান রামেনের সাথে আপনার নিজস্ব সৃজনশীলতার মিশ্রণ ঘটে। এছাড়াও, কিমচি তৈরি করাটা হয়তো একটু সময়সাপেক্ষ, কিন্তু একবার শিখে গেলে সারা বছর তাজা কিমচির স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন। এই ধরনের ফিউশন আর DIY রান্না ইতালির মানুষের মধ্যেও বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে।
ঘরে বসে কোরিয়ান রামেন পার্টি
ভাবতেই পারছেন না, কত সহজে বাড়িতে বসে একটা দারুণ কোরিয়ান রামেন পার্টি আয়োজন করা যায়! আমি তো নিজেই বন্ধুদের সাথে প্রায়ই রামেন নাইট করি। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ইনস্ট্যান্ট রামেন কিনে আনি, সাথে থাকে ডিম, স্প্রিং অনিয়ন, মাশরুম, টুকরো করা সেদ্ধ মাংস বা টোফু। এরপর সবাই নিজের পছন্দমতো রামেন বেছে নিয়ে সেগুলো রান্না করে, আর পাশে রাখা থাকে প্রচুর টপিংস। ব্যাপারটা এতটাই মজাদার যে, একঘেয়ে ডিনার পার্টির বদলে এটা এখন আমার বন্ধুদের কাছে সবচেয়ে পছন্দের একটা ইভেন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। রামেন তৈরি করার সময় আমি সবসময় চেষ্টা করি একটু বেশি করে সবজি যোগ করতে, যাতে সেটা শুধু সুস্বাদু না হয়ে স্বাস্থ্যকরও হয়। এটা আসলে আপনার রুচি আর পছন্দের উপর নির্ভর করে যে আপনি আপনার রামেনকে কতটা ফিউশন আর উত্তেজনাপূর্ণ বানাতে চান।
কিমচি তৈরির গোপন টিপস
কিমচি! কোরিয়ান খাবারের প্রাণ বলা চলে একে। যদিও বাজারে অনেক ভালো মানের কিমচি পাওয়া যায় [cite: ৭], কিন্তু নিজের হাতে তৈরি কিমচির স্বাদই আলাদা। আমি নিজে অনেকবার কিমচি তৈরি করার চেষ্টা করেছি, প্রথম দিকে হয়তো ততটা ভালো হয়নি, কিন্তু ধীরে ধীরে হাত পেকেছে। আমার একটা গোপন টিপস আছে – কিমচি বানানোর সময় ন্যাপা বাঁধাকপি (Napa Cabbage) ভালো করে লবণ দিয়ে মেখে অন্তত ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে, যাতে এর অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যায়। এরপর ভালো করে ধুয়ে শুকনো করে নিতে হবে। মশলার মিশ্রণটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, এতে আদা, রসুন, লঙ্কা, মাছের সস (fish sauce) আর একটু চিনি যোগ করলে স্বাদটা দারুণ আসে। অনেকে এতে কোরিয়ান মুলাও যোগ করে। একবার কিমচি তৈরি হয়ে গেলে, সেটা এয়ারটাইট কন্টেইনারে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে অনেকদিন তাজা থাকে। আমি তো এখন পুরো এক ব্যাচ কিমচি তৈরি করে রাখি, আর যখনই ইচ্ছে হয়, সাথে সাথে বের করে খাই।
ইতালির গলি-ঘুঁজিতে কোরিয়ান স্ট্রিট ফুডের স্বাদ

ইতালির রাস্তাঘাটে হাঁটতে হাঁটতে যখন দেখি ছোট ছোট কোরিয়ান স্ট্রিট ফুড ভ্যান বা পপ-আপ স্টল, তখন মনটা খুশিতে ভরে যায়! [cite: ৮] আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, একবার মিলানে একটা ফুড ফেস্টিভ্যালে গিয়েছিলাম, সেখানে একটা কোরিয়ান ফুড ট্রাক দেখে আমি তো রীতিমতো চমকে গেছি [cite: ৪]। তারা জ্যাপচে (Japchae), ডাক গাংজিয়ং (Dak Gangjeong) আর কিমচি বান (Kimchi Bun) বিক্রি করছিল [cite: ৪]। ডাক গাংজিয়ংটা তো এত ক্রিসপি আর সুস্বাদু ছিল যে মনে হচ্ছিল যেন কোরিয়ার কোনো রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে খাচ্ছি!
এই স্ট্রিট ফুডগুলো আসলে কোরিয়ান সংস্কৃতির একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা ইতালির মানুষের কাছে নতুন আকর্ষণ তৈরি করছে। ছোট ছোট মণ্ডা-মিঠাই থেকে শুরু করে মশলাদার টকপোকি (Tteokbokki) – সবকিছুরই একটা নিজস্ব আবেদন আছে। আমি দেখেছি, অনেকেই ইতালীয় পিৎজা বা পাস্তার পাশাপাশি এই কোরিয়ান স্ট্রিট ফুডগুলো চেখে দেখছেন। আর সত্যি বলতে কি, একবার এই স্বাদগুলো চেখে দেখলে আপনিও এর প্রেমে পড়ে যাবেন!
[cite: ৮]
স্ট্রিট ফুড ফেস্টিভ্যালে কোরিয়ান চমক
ইতালিতে এখন বিভিন্ন ফুড ফেস্টিভ্যাল লেগেই থাকে, আর সেখানে কোরিয়ান স্ট্রিট ফুডের উপস্থিতি রীতিমতো চমক সৃষ্টি করছে। তুরিনের ‘ফেস্টাভ্যাল দেল’ওরিয়েন্টে’ (Festival dell’Oriente)-এর মতো বড় ইভেন্টগুলোতে কোরিয়ান স্ট্রিট ফুডের স্টলগুলো সবসময়ই ভিড়ে ঠাসা থাকে [cite: ৮]। আমি দেখেছি, কিভাবে ইতালীয়রা কৌতূহল নিয়ে টকপোকি (Tteokbokki), ওডেন (Odeng) বা কিমচি প্যানকেকের (Kimchi Pancake) মতো খাবারগুলো চেখে দেখছে। তাদের চোখে মুখে একটা নতুন স্বাদের আবিষ্কারের আনন্দ দেখা যায়। আমার মনে হয়, এই ফেস্টিভ্যালগুলো শুধুমাত্র খাবার পরিবেশন করে না, বরং কোরিয়ান সংস্কৃতিকে আরও ভালোভাবে জানার একটা সুযোগ তৈরি করে দেয়। আমি নিজেও এমন অনেক ফেস্টিভ্যালে গিয়ে নতুন নতুন কোরিয়ান স্ট্রিট ফুড চেখে দেখেছি আর প্রতিবারই মুগ্ধ হয়েছি। বিশেষ করে, যখন দেখি একটা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ইতালীয়রা কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেন বা কর্ন ডগের জন্য অপেক্ষা করছে, তখন সত্যিই ভালো লাগে।
সহজলভ্য স্ট্রিট ফুড রেসিপি
যারা কোরিয়ান স্ট্রিট ফুডের ভক্ত, তাদের জন্য কিছু সহজলভ্য রেসিপি তো আমি দিতেই পারি। ধরুন, টকপোকি বানাতে গেলে আপনার শুধু চালের কেক (rice cake), গোচুজাং সস (gochujang sauce) আর কিছু সবজি লাগবে। খুব অল্প সময়েই আপনি দারুণ টকপোকি বানিয়ে ফেলতে পারবেন। এছাড়াও, কিমচি ফ্রাইড রাইস (Kimchi Fried Rice) বা জ্যাপচে (Japchae)-এর মতো খাবারগুলোও খুব সহজে ঘরে বানানো যায়। এর জন্য খুব বেশি জটিল উপকরণের প্রয়োজন হয় না। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলছে, স্ট্রিট ফুড মানেই যে বাইরে থেকে কিনে খেতে হবে, এমনটা নয়। আপনি চাইলেই আপনার পছন্দের কোরিয়ান স্ট্রিট ফুডগুলো বাড়িতে বসেই তৈরি করে নিতে পারেন। এটা শুধু আপনার সময় বাঁচাবে না, বরং আপনার পকেটও বাঁচাবে!
আর নিজের হাতে তৈরি খাবারের স্বাদ তো সবসময়ই একটু বেশিই ভালো লাগে, তাই না?
কোরিয়ান খাবার আর ইতালিয়ান ওয়াইন: এক অদ্ভুত মেলবন্ধন
সত্যি বলতে কি, কোরিয়ান খাবার আর ইতালিয়ান ওয়াইন – এই দুটো একসঙ্গে শুনলে অনেকেরই হয়তো ভুরু কুঁচকে যাবে। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলছে, এটা এক অদ্ভুত কিন্তু দারুণ মেলবন্ধন!
ইতালির ঐতিহ্যবাহী ওয়াইনের সাথে কোরিয়ান খাবারের মশলাদার আর ফ্লেভারফুল স্বাদ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে পারে। আমি নিজে অনেকবার পরীক্ষা করে দেখেছি যে, কোরিয়ান বারবিকিউ বা ভুলগোগির সাথে একটা হালকা ইতালিয়ান রেড ওয়াইন, যেমন কিয়ানটি (Chianti) বা বারবারা (Barbera), দারুণ মানিয়ে যায়। ওয়াইনের হালকা ট্যানিন মাংসের চর্বিদার ভাবকে কমিয়ে দেয় এবং একটা দারুণ ভারসাম্য তৈরি করে। আবার, সি-ফুড কোরিয়ান খাবারের সাথে, যেমন হওয়েপাব (Hoedeopbap) বা জ্যামপং (Jjamppong), একটা ফ্রেশ আর ক্রিস্পি ইতালিয়ান হোয়াইট ওয়াইন, যেমন পিনোট গ্রিজিও (Pinot Grigio) বা ভেরডিকিও (Verdicchio), অসাধারণ লাগে। এই ধরনের ফিউশন কম্বিনেশন ইতালীয়দের কাছেও বেশ নতুন এবং কৌতূহলজনক মনে হচ্ছে।
ওয়াইন পেয়ারিংয়ের নতুন কৌশল
ওয়াইন পেয়ারিং বলতে আমরা সাধারণত ইতালীয় বা ফরাসি খাবারের সাথেই ওয়াইনের মিল খুঁজে থাকি। কিন্তু কোরিয়ান খাবারের ক্ষেত্রেও এই নতুন কৌশলটা বেশ ফলপ্রসূ হতে পারে। আমি দেখেছি, কোরিয়ান খাবারের ঝাল আর উমামি (umami) স্বাদের সাথে মিষ্টি বা আধা-মিষ্টি ওয়াইন (যেমন রাইস ওয়াইন বা কিছু প্রোসেকো) চমৎকার কাজ করে। ভুলগোগির মতো একটু মিষ্টি স্বাদের মাংসের সাথে হালকা রেড ওয়াইন বা রোজ ওয়াইন (Rosé Wine) খুব ভালো যায়। আবার, কিমচি জিগের (Kimchi Jjigae) মতো ঝাল স্যুপের সাথে হালকা মিষ্টি রাইস ওয়াইন বা চিল্ড সোভিগন ব্ল্যাঙ্ক (Chilled Sauvignon Blanc) দারুণ মানানসই। এই পেয়ারিংগুলো শুধুমাত্র খাবারের স্বাদকে বাড়ায় না, বরং একটা নতুন ধরনের কুলিনারি অভিজ্ঞতাও দেয়। আমার মনে হয়, ইতালিতে ওয়াইনপ্রেমীদের জন্য কোরিয়ান খাবারের সাথে ওয়াইনের এই নতুন পেয়ারিং কৌশলটা বেশ আকর্ষণীয় হবে।
ইতালীয় টেবিল, কোরিয়ান স্বাদ
imagine করুন, আপনার ইতালীয় ডাইনিং টেবিলে শোভা পাচ্ছে কোরিয়ান বারবিকিউ, তার পাশে রাখা আছে ইতালির সেরা ওয়াইনের বোতল। এ যেন দুই সংস্কৃতির এক অসাধারণ মিলন!
আমি অনেক ইতালীয় পরিবারকে দেখেছি যারা এখন মাঝে মাঝে কোরিয়ান ডিশ তাদের নিয়মিত ডাইনিংয়ে যোগ করছে। তারা হয়তো রোস্ট চিকেন বা পাস্তার পাশাপাশি কোরিয়ান জ্যাপচে বা কিমচি ফ্রাইড রাইস পরিবেশন করছে। এটা শুধু খাবারের বৈচিত্র্যই বাড়াচ্ছে না, বরং পারিবারিক আড্ডাকেও আরও মজাদার করে তুলছে। আমার তো মনে হয়, ইতালীয়দের আপ্যায়ন আর কোরিয়ান খাবারের স্বাদ – এই দুইয়ের মিশ্রণ এক নতুন ট্রেন্ড তৈরি করবে। ইতালীয়রা তাদের উদারতা আর আতিথেয়তার জন্য বিখ্যাত, আর কোরিয়ান খাবারের মাধ্যমে তারা এখন আরও নতুনভাবে তাদের অতিথি আপ্যায়ন করতে পারছে।
আমার প্রিয় কোরিয়ান রেসিপি: ঘরোয়া টিপস সহ
আমার তো কোরিয়ান খাবারের প্রতি একটা আলাদা দুর্বলতা আছে, আর এর মধ্যে কিছু রেসিপি আমার ব্যক্তিগতভাবে এতটাই পছন্দের যে প্রায়ই আমি সেগুলো বাড়িতে বানাই। এর মধ্যে অন্যতম হলো কিমচি জিগে (Kimchi Jjigae) আর কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেন (Korean Fried Chicken)। কিমচি জিগে বানাতে আমার খুব বেশি সময় লাগে না, আর এর উষ্ণ ও মশলাদার স্বাদ ঠান্ডার দিনে অসাধারণ লাগে। আমি সবসময় চেষ্টা করি এতে একটু বেশি করে টোফু আর সবুজ পেঁয়াজ দিতে, যাতে স্বাদটা আরও বাড়ে। আর কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেন!
আহা, এর ক্রিসপি টেক্সচার আর সুস্বাদু সসের কথা ভাবলেই মুখে জল আসে। আমি সবসময় চেষ্টা করি চিকেনটা একবার ভেজে আবার ভাজতে, যাতে সেটা আরও ক্রিসপি হয়। এই রেসিপিগুলো শুধুমাত্র সুস্বাদু নয়, বরং এগুলো তৈরি করার সময় একটা দারুণ আনন্দও পাই। আমার মনে হয়, যারা নতুন কোরিয়ান রান্না শুরু করতে চাইছেন, তাদের জন্য এই রেসিপিগুলো একটা দারুণ শুরু হতে পারে।
ঝটপট কিমচি জিগে: ঠান্ডার দিনের আরাম
কিমচি জিগে আমার কাছে যেন ঠান্ডার দিনের এক বাটি আরাম। এটা এতটাই সহজ আর তাড়াতাড়ি বানানো যায় যে আমার মনে হয় যে কেউ চেষ্টা করলেই পারবে। এর জন্য আমি প্রথমে একটু তেল দিয়ে পেঁয়াজ আর রসুন ভেঁজে নিই, এরপর এতে পুরোনো কিমচি (old kimchi) আর শুয়োরের মাংসের টুকরো (বা টোফু) দিয়ে কিছুক্ষণ কষাই। এর পর একটু জল বা স্টক দিয়ে ফুটিয়ে নিই। শেষে একটু টোফু আর সবুজ পেঁয়াজ ছড়িয়ে দিই। অনেকে ডিমও যোগ করে। আমার ব্যক্তিগত টিপস হলো, কিমচিটা যত পুরোনো হবে, জিগের স্বাদ তত ভালো হবে!
আর একটু ঝাল খেতে চাইলে শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো যোগ করতে পারেন। বিশ্বাস করুন, একবার এই ঝটপট কিমচি জিগে বানিয়ে খেলে আপনিও এর প্রেমে পড়ে যাবেন। [cite: ৭]
কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেন: ক্রিসপি এবং সুস্বাদু
কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেন, বা ‘চিম্যাক’ (Chimaek) – চিকেন আর বিয়ারের এই জুটিটা আমার কাছে এক দারুণ আবিষ্কার। আমি নিজে অনেকবার এটা বানিয়েছি আর প্রতিবারই মুগ্ধ হয়েছি। এর মূল রহস্য হলো, চিকেনটা দু’বার ভাজা। প্রথমবার হালকা করে ভেঁজে তুলে নিই, এরপর আবার একটু বেশি তাপে ভাজলে চিকেনটা বাইরের দিকে ক্রিসপি আর ভেতরের দিকে রসালো থাকে। সসের জন্য আমি গোচুজাং, মধু, সয়া সস, রসুন আর আদার একটা মিশ্রণ তৈরি করি। ভাজা চিকেনগুলো সসে মাখিয়ে নিলে সেটার স্বাদ এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। আমার তো মনে হয়, যেকোনো পার্টি বা গেট-টুগেদারে এই কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেনটা দারুণ হিট!
একবার খেলে মনে হবে যেন আপনি কোনো কোরিয়ান রেস্টুরেন্টে বসে খাচ্ছেন।
글을마চি며
আরে আমার প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি ইতালির এই কোরিয়ান স্বাদের দুনিয়ায় আমার সাথে ঘুরে আপনাদেরও দারুণ লেগেছে! আমি বিশ্বাস করি, খাবার শুধুমাত্র ক্ষুধা নিবারণ করে না, বরং এটি এক সংস্কৃতি থেকে অন্য সংস্কৃতিতে যোগাযোগের এক দারুণ মাধ্যম। ইতালির বুকে বসে কোরিয়ান খাবারের এই জনপ্রিয়তা সত্যিই এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, যা আমাদের খাদ্যাভ্যাসকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলছে।
알াথুতেম সিলমো ইন্ফরমেশন
১. কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট খোঁজার টিপস: মিলান, রোম, ফ্লোরেন্সের মতো বড় শহরগুলোতে Ginmi, Sonamu, My Kimchi-এর মতো নামকরা রেস্টুরেন্টগুলো শুরু করার জন্য দারুণ জায়গা [cite: ২, ৩]। তবে, ছোট শহরগুলোতেও নতুন নতুন কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। আপনারা অনলাইনে রিভিউ দেখে বা স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে নতুন এবং অথেন্টিক ঠিকানা খুঁজে নিতে পারেন। অনেক সময় ছোট ক্যাফে বা পপ-আপ স্টলও দারুণ কোরিয়ান খাবার পরিবেশন করে।
২. সুপারমার্কেট গাইড: যারা ঘরে বসে কোরিয়ান রান্না করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ইতালির বড় শহরগুলোতে এখন প্রচুর কোরিয়ান এবং এশিয়ান সুপারমার্কেট পাওয়া যায়। K-pop Goods Shop Korea Supermarket, East Asia Mart (মিলানে) বা Xin Shi (রোমে) এর মতো জায়গাগুলোতে কিমচি, রামেন, বিবিধ কোরিয়ান সস (যেমন গোচুজাং, ডেনজাং), মশলাপাতি এবং তাজা কোরিয়ান সবজি সবই হাতের কাছেই পাবেন [cite: ৬, ৭]। এখানকার পণ্যের বৈচিত্র্য দেখে আপনারা মুগ্ধ হবেন!
৩. ঘরে কোরিয়ান রান্না: কোরিয়ান রান্না করা মোটেও কঠিন নয়, বিশেষ করে রামেন! আপনারা পছন্দের ব্র্যান্ডের ইনস্ট্যান্ট রামেন কিনে তাতে ডিম, স্প্রিং অনিয়ন, মাশরুম, সেদ্ধ মাংস বা পনির যোগ করে এর স্বাদকে এক ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারেন। কিমচি বানাতে চাইলে ন্যাপা বাঁধাকপি ভালো করে লবণ দিয়ে মেখে জল ঝরিয়ে নিন, এরপর আপনার পছন্দের মশলার মিশ্রণ দিয়ে তৈরি করে ফেলুন ঘরে বসেই তাজা কিমচি।
৪. স্ট্রিট ফুড উপভোগ: ইতালির বিভিন্ন ফুড ফেস্টিভ্যালগুলোতে (যেমন তুরিনের Festival dell’Oriente) প্রায়ই কোরিয়ান স্ট্রিট ফুডের স্টল দেখা যায় [cite: ৮]। Tteokbokki, Dak Gangjeong, Japchae, Kimchi Pancake বা কর্ন ডগের মতো জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুডগুলো চেখে দেখার দারুণ সুযোগ মেলে সেখানে [cite: ৪, ৮]। এছাড়াও, অনেক সময় শহরের বিভিন্ন গলি-ঘুঁজিতে ছোট পপ-আপ স্টল বা ফুড ভ্যানও কোরিয়ান স্ট্রিট ফুড বিক্রি করে, যা স্থানীয়দের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
৫. ওয়াইন পেয়ারিং: কোরিয়ান খাবারের সাথে ইতালিয়ান ওয়াইনের মেলবন্ধন এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে পারে। কোরিয়ান বারবিকিউ বা ভুলগোগির সাথে হালকা ইতালিয়ান রেড ওয়াইন (যেমন Chianti বা Barbera) ভালো যায়। সামুদ্রিক খাবারের সাথে ফ্রেশ আর ক্রিস্পি হোয়াইট ওয়াইন (যেমন Pinot Grigio) চমৎকার লাগে। ঝাল কোরিয়ান খাবারের সাথে একটু মিষ্টি বা আধা-মিষ্টি রাইস ওয়াইন বা প্রোসেকোও দারুণ মানানসই হতে পারে। বিভিন্ন ওয়াইন চেষ্টা করে নিজের পছন্দের জুটি খুঁজে বের করুন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
ইতালিতে কোরিয়ান খাবারের এই রমরমা শুধুমাত্র একটি ক্ষণস্থায়ী প্রবণতা নয়, বরং এটি একটি স্থায়ী সাংস্কৃতিক বিনিময়, যা খাদ্যের মাধ্যমে দুই ভিন্ন সংস্কৃতিকে কাছাকাছি নিয়ে আসছে। K-pop এবং K-drama-র জনপ্রিয়তা যেভাবে ইতালীয়দের মধ্যে কোরিয়ান সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ বাড়াচ্ছে, তাতে কোরিয়ান খাবারের এই উত্থান খুবই স্বাভাবিক। রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে সুপারমার্কেট, এমনকি ঘরে বসে রান্না করার মাধ্যমেও এই নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই খাবারগুলো শুধু জিভে জল আনা নয়, বরং প্রতিটি কামড়ে এক নতুন গল্প বলে। ইতালীয়দের ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতি অটল ভালোবাসা থাকলেও, তারা নতুন কিছু চেখে দেখতে সবসময়ই প্রস্তুত থাকে, আর সেই সুযোগটাই করে দিচ্ছে কোরিয়ান খাবার। তাই দ্বিধা না করে, ইতালির বুকে কোরিয়ান স্বাদের এই নতুন অভিযানে আপনারাও সামিল হন আর প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করুন!
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: ইতালির কোন শহরগুলিতে সেরা কোরিয়ান রেস্টুরেন্টগুলি খুঁজে পাওয়া যাবে এবং কীভাবে আমি সেগুলি চিনতে পারবো?
উ: আমার অভিজ্ঞতা বলে, ইতালিতে সত্যিকারের কোরিয়ান খাবারের স্বাদ পেতে হলে রোম, মিলান, ফ্লোরেন্স এবং এমনকি ভেনিসের মতো বড় শহরগুলিতেই আপনার নজর রাখতে হবে। আমি নিজে যখন প্রথম রোমের একটি ছোট গলিতে সত্যিকারের এক কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট খুঁজে পেলাম, সে কি আনন্দ!
মনে রাখবেন, একটি ভালো রেস্টুরেন্ট চেনার কয়েকটি সহজ উপায় আছে। প্রথমত, দেখুন তাদের মেনুতে শুধু কোরিয়ান খাবারই আছে কিনা, নাকি চাইনিজ বা জাপানিজ খাবারের সাথে মেশানো। দ্বিতীয়ত, গুগল রিভিউ এবং স্থানীয় ফুড ব্লগগুলোতে তাদের রেটিং ও কমেন্টস দেখে নিতে পারেন। অনেকেই কোরিয়ান মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলোকে বেশি ভরসা করেন, কারণ সেখানে সাধারণত খাবারের মান ও আসল স্বাদ বজায় থাকে। এছাড়াও, অনেক রেস্টুরেন্টের বাইরে কোরিয়ান হরফে নাম লেখা থাকে, যা আপনাকে সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে। অনেক সময় দেখবেন, স্থানীয় কোরিয়ান কমিউনিটির লোকেরাও সেই রেস্টুরেন্টগুলোতে খেতে যাচ্ছেন, এটাও একটা দারুণ সংকেত!
প্র: ইতালিতে কি কোরিয়ান সুপারমার্কেট পাওয়া যায়? সেখানে সাধারণত কী কী পণ্য পাওয়া যায় এবং আমার পছন্দের রামেন বা কিমচি কি আমি সেখানে পাবো?
উ: আরে হ্যাঁ, অবশ্যই পাওয়া যায়! প্রথম দিকে খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন ছিল, কিন্তু এখন ইতালির বড় শহরগুলিতে, বিশেষ করে মিলান আর রোমে, বেশ কিছু দারুণ কোরিয়ান সুপারমার্কেট গজিয়ে উঠেছে। আমি নিজে যখন প্রথম মিলানের একটি কোরিয়ান সুপারমার্কেটে ঢুকলাম, মনে হচ্ছিল যেন এশিয়ার কোনো এক কোণে চলে এসেছি!
সেখানে গেলে আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে নানা ধরনের কোরিয়ান পণ্যে। আপনি আপনার পছন্দের সব ধরনের রামেন (ঝাল বা হালকা), বিভিন্ন প্রকারের কিমচি (যেমন বাচু কিমচি, কাকডুগি), সামজেং, গোচুজাং-এর মতো বিভিন্ন সস, কোরিয়ান নুডুলস, স্নাক্স, এমনকি কোরিয়ান কফিও পেয়ে যাবেন। এছাড়াও তাজা সবজি যেমন মুলা, এনোকি মাশরুম, এবং অন্যান্য রান্নার উপকরণ যেমন টোফুও পাওয়া যায়। আমি তো যখনই যাই, ঝুড়ি ভর্তি করে কিনি!
মনে রাখবেন, এগুলোর স্টক সীমিত থাকতে পারে, তাই আগেভাগে গিয়ে আপনার পছন্দের জিনিসপত্র কিনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
প্র: K-pop এবং K-drama-র জনপ্রিয়তার কারণে ইতালিতে কোরিয়ান খাবারের প্রতি আগ্রহ কতটা বেড়েছে বলে আপনি মনে করেন?
উ: আমার মনে হয়, K-pop আর K-drama-র জনপ্রিয়তা ইতালিতে কোরিয়ান খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে! আমি তো নিজেই দেখেছি, কীভাবে আমার ইতালীয় বন্ধুরা K-drama দেখতে দেখতে কোরিয়ান খাবার চেখে দেখার জন্য পাগল হয়ে যায়। যখন তারা নাটকে চরিত্রদের রামেন খেতে দেখে, কিমচি খায় বা কোরিয়ান BBQ উপভোগ করে, তখন তাদেরও সেই স্বাদ নেওয়ার তীব্র ইচ্ছা জাগে। এই সাংস্কৃতিক ঢেউ শুধু গান আর নাটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, এটি কোরিয়ান জীবনযাপন, ফ্যাশন এবং অবশ্যই খাবারের প্রতিও আগ্রহ তৈরি করেছে। অনেক ইতালীয় তরুণ-তরুণী এখন কোরিয়ান রেস্টুরেন্টে গিয়ে নতুন নতুন খাবার ট্রাই করছে, এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে সেগুলোর ছবি পোস্ট করছে। আমি নিশ্চিত, এই ট্রেন্ড আগামী দিনে আরও জোরালো হবে, এবং আমরা ইতালিতে আরও বেশি কোরিয়ান ফুড ফেস্টিভ্যাল বা ফিউশন রেস্টুরেন্ট দেখতে পাবো। আমার অভিজ্ঞতা বলে, এই ঢেউটা থামার নয়, বরং আরও বড় হচ্ছে!






